what is architecture

Architecture বা স্থাপত্যের অর্থ কী?

Architecture বা স্থাপত্য বলতে আমরা সাধারণত ভবন তৈরি, নির্মাণ কাজ, এবং অ্যাপার্টমেন্ট ডিজাইনের কথা ভাবি। তবে স্থাপত্যের অর্থ আরও গভীর। এটি শুধুমাত্র ইমারত নির্মাণের প্রক্রিয়া নয়, বরং এটি নান্দনিকতা, কার্যকারিতা, এবং সাংস্কৃতিক পরিচয়ের প্রতিফলন। অনেকের জন্য, স্থাপত্য হল মূল্যবোধ, ইতিহাস এবং চিন্তাধারার প্রতিফলন ঘটায়। নান্দনিকতার বাইরেও, এটি মানুষের জীবনযাত্রার গুণমান উন্নত করার পাশাপাশি, স্থানীয় ঐতিহ্য ও পরিবেশের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে দেয়।

Architect বা স্থপতি হলেন সেই ব্যক্তি যিনি স্থাপত্যের ধারণা এবং নকশা তৈরি করেন। স্থপতিরা তাদের সৃষ্টিশীলতা এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতার মাধ্যমে এমন নকশা তৈরি করেন যা নান্দনিক, কার্যকরী এবং মানুষের প্রয়োজনের সাথে মানানসই হয়।

বাংলাদেশের মানুষ ও স্থাপত্য

বাংলাদেশের স্থাপত্য একটি সমৃদ্ধ পটভূমি যা দেশের ঐতিহাসিক শেকড় এবং আধুনিক আকাঙ্ক্ষাগুলির প্রতিফলন। বাংলাদেশের মানুষের এবং স্থাপত্যের মধ্যে সম্পর্ক গত কয়েক দশকে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। গত পনেরো বছরে, বাংলাদেশ একটি নতুন সাংস্কৃতিক স্থাপত্যের তরঙ্গ গ্রহণ করেছে। বঙ্গ অঞ্চল এবং বৃহত্তর ভারতীয় উপমহাদেশের নকশার প্রভাব থেকে প্রেরণা নিয়ে, দেশের আধুনিক ভবনগুলি এখন প্রাচীন স্মৃতিস্তম্ভের পাশে গর্বের সাথে দাঁড়িয়ে আছে। ধর্ম, ইতিহাস, এবং সংস্কৃতিতে গভীরভাবে প্রোথিত এই স্থাপত্যের মেলবন্ধন প্রতিফলিত করে কীভাবে আধুনিক প্রকল্পগুলি অতীতের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের এবং এর শহরের জন্য একটি প্রাণবন্ত ভবিষ্যৎ কল্পনা করে।

architectural patterns of Bangladesh

Bangladesh and architecture

আধুনিক বাংলাদেশের স্থাপত্যের মূল

এই পরিবর্তন বোঝার জন্য, আমাদের কিছুটা পিছনে যেতে হবে। আধুনিক বাংলাদেশের স্থাপত্যের মূলগুলির সূত্রপাত ১৯৫০-এর দশকে, যখন অঞ্চলটি পূর্ব পাকিস্তান হিসেবে পরিচিত ছিল। বাংলাদেশ থেকে প্রথম পেশাদার স্থপতি মুজহারুল ইসলাম ১৯৫২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়ন শেষ করে ঢাকা ফিরে আসেন। তার দ্বারা নির্মিত ফ্যাকাল্টি অফ ফাইন আর্টস (১৯৫৩–৫৬) আধুনিক ডিজাইনকে স্থানীয় ঐতিহ্য এবং আবহাওয়ার সাথে কিভাবে সংযুক্ত করেছেন তার একটি প্রাথমিক উদাহরণ।

স্থপতি মাজহারুল ইসলামের প্রভাব এখানেই থেমে থাকেনি। তিনি পূর্ব পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক স্থপতিদের যেমন লুই আই. খান এবং পল রুডলফকে আকৃষ্ট করেছিলেন। খান-এর জাতীয় সংসদ ভবন, যা এখন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক, এবং রুডলফের ময়মনসিংহের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এই যুগের স্নাতক স্থাপত্যকর্ম। বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর, দেশটি তার ইতিহাসকে সম্মান জানানোর চেষ্টা করেছে। জাতীয় শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ, যা বশিরুল হকের দ্বারা ডিজাইন করা হয়েছিল এবং ১৯৮২ সালে উন্মোচন করা হয়েছিল, স্বাধীনতার জন্য জাতির সংগ্রামের শক্তিশালী শ্রদ্ধাঞ্জলি হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।

শহুরীকরণ এবং স্থাপত্যের রূপান্তর

বাংলাদেশে ১৯৮০ এর দশকের শেষ থেকে দ্রুত শহুরীকরণ এবং ভূমির উচ্চ চাহিদা স্থাপত্যে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে। বেসরকারি রিয়েল এস্টেট ডেভেলপাররা ঐতিহ্যবাহী বাড়িগুলোকে বহুতল অ্যাপার্টমেন্টে রূপান্তরিত করে, যার ফলে নতুন উপকরণ এবং ডিজাইনের সাথে স্থাপত্যে উদ্ভাবন শুরু হয়। নতুন শ্রেণীর উদ্যোক্তারা স্থাপত্য প্রকল্পে বিনিয়োগ করে, যা নবীন স্থপতিদের কাজের সুযোগ বৃদ্ধি করে এবং ডিজাইনে নতুনত্ব আনে। আধুনিক এবং ঐতিহ্যবাহী শৈলীর মিশ্রণে গত দুই দশকে স্থাপত্যের ধারণা পরিবর্তিত হয়েছে, যেখানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা জাদুঘর এই পরিবর্তনের একটি উদাহরণ।

মূলত, বাংলাদেশের স্থাপত্য দৃশ্য আজ ঐতিহ্য ও আধুনিকতার একটি মিশ্রণ প্রতিফলিত করে, যা অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং নতুন পরিচয় খোঁজার দ্বারা চালিত হয়। তবুও, দেশটি এগিয়ে চলার সাথে সাথে, স্থপতিরা তাদের ডিজাইনে সৌন্দর্য এবং সামাজিক ন্যায়বিচার উভয়ই সম্বোধনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। বাংলাদেশের মানুষের এবং তাদের স্থাপত্যের মধ্যে সংলাপ পরিবর্তিত হয়েছে, আধুনিক প্রকল্পগুলি ঐতিহাসিক মূলগুলির সাথে উদ্ভাবনী দৃষ্টিভঙ্গির ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করছে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের জন্য।

আরও জানতে আমাদের ফেসবুক পেজ ফলো করতে পারেন https://www.facebook.com/symbioticarchitectsandassociates

অথবা আমাদের মেইল করতে পারেন  https://www.symbiotic.com.bd/emailus/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Post comment